
শরীয়তপুর।।
গত ৫ মে বিকালে হঠাৎ বন্দর নিউজের পেইজে একটি ইনবক্স আসে আংগারিয়া ইউনিয়ন পরিষদে রেশন কার্ড বন্টন নিয়ে হট্টগোল হচ্ছে। খবর পেয়েই বন্দর নিউজ টীম সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি দেখে রাতেই একটি নিউজ করে।




এ সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বন্দর নিউজ টীম অনুসন্ধানে নামে।

অনুসন্ধানে যে তথ্য বেরিয়ে আসে তা যে কাউকেই অবাক করবে। আংগারিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের কালাই সরদারের ছেলে মাসুম সরদার। যার পুরো পরিবার এক সময় প্রত্যক্ষভাবে বিএনপির রাজনীতি করতো। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় এলে এই মাসুম সরদার ও তার ভাইদের ভয়ে এ অঞ্চলে কেউ আওয়ামীলীগের নামও নিতে পারতো না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বন্দর নিউজকে বলেন- মাসুম সরদার ও তার ভাইরা মিলে এ অঞ্চলের আওয়ামীলীগ করা ব্যক্তিদের উপর অনেক অত্যাচার করেছে, নির্যাতন করেছে। তাদের ভয়ে কেউ এক সময় শান্তিমত বসবাস করতে পারেনি। এখন আওয়ামীলীগ ক্ষমতায়, এই তারাই আবার আওয়ামীলীগ হয়ে সেই কর্তৃত্ব করে যাচ্ছে। আর আমরা সাধারণ আওয়ামী পন্থী মানুষেরা জুলুমের শিকার হয়েই যাচ্ছি।
এছাড়াও বাজারের ব্যবসায়ী মনির ছৈয়ালকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করারও অভিযোগ পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে।
এই সকল ঘটনায় মাসুম সরদারের ডানহাত হিসেবে কাজ করছে মাসুম সরদারের ছেলে আশরাফুল ইসলাম বাবু সরদার এমন কথাও উঠে আসে অভিযোগের সাথে।
সূত্র মিলে গেলো-
ধারাবাহিক ভাবে এ সব কর্ম করার পরও তাদের তেমন বিচার না হওয়াতেই তারা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. জাহাঙ্গীর হোসেনের সামনেই সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা ও তার সাথে থাকা ব্যক্তিদের উপর চড়াও হওয়ার সাহস পেয়েছে। এবং পরদিন ৬ মে লকডাউন নীতি উপেক্ষা করে লোকজন নিয়ে আংগারিয়াতে শো-ডাউন করতেও দ্বিধাবোধ করেনি।
তারপর বন্দর নিউজের প্রতিনিধিরা মাসুম সরদারের বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগ হয়ে ওঠার রহস্য অনুসন্ধানে বের হয়ে পড়ে।
অনুসন্ধানে বেড়িয়ে আসে, প্রায় ৫ বছর আগে কোনঠাসা হয়ে পড়া মাসুম সরদার গং আংগারিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার কামালের সাথে যোগাযোগ করে আওয়ামী লীগে যোগদানের ইচ্ছা পোষণ করে। আনোয়ার কামাল তখন তাদের আগ্রহের প্রতি সম্মান জানিয়ে আওয়ামী লীগ করার জন্য তাদের মৌখিকভাবে সম্মতি প্রদান করে।
অভিযোগ আছে, তার কিছুদিন পরেই তারা আবার বেপরোয়া হয়ে ওঠে। এখন তারা আওয়ামী লীগের কর্মীদের উপরই কর্তৃত্ব স্থাপন করেছে।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, বর্তমানে তারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্তৃত্ব অস্বীকার করে শরীয়তপুর পৌরসভার প্যানেল মেয়র বাচ্চু বেপারির আনুগত্য স্বীকার করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো এক ব্যক্তি এ প্রসঙ্গে বলেন, মাসুম সরদার গং বাচ্চু বেপারির নাম ভাঙ্গিয়ে এ অঞ্চলে এক ধরণের রাজত্ব কায়েম করেছে। তাই তারা অন্য কাউকে মানেনা। তারা লাগাম ছাড়া আচরণ করছে মানুষের সাথে। বিএনপির সময় তারা কট্টর বিএনপি, এখন আওয়ামী লীগের সময় তারা আবার আওয়ামী লীগ। ভাবা যায়! আমরা তখনও নির্যাতনের শিকার হয়েছি, এখনও নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। আমাদের মুক্তি নাই। ক্ষমতা যেদিক, তারা সেদিক।
পুরো অনুসন্ধানে সাধারণ আওয়ামী পন্থীদের একটি দাবীই লক্ষ্য করা গিয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী এ সমস্ত হাইব্রিডদের দলে যেন আর স্থান দেওয়া না হয়। এ ব্যাপারে তারা শরীয়তপুর-১ আসেনর মাননীয় সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপুর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
পাশাপাশি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেছেন,”মাসুম সরদার কে কয়বার মারছে সেটাও দেখার বিষয়।মাসুম সরদারের ঘেেরের মাছ বিষ দিয়ে মেরে ফেলেছে, তার লহ্ম লহ্ম টাকা লোকসান হয়েছে। ” আরেকজন বলেন, হট্ট গোল কি নিয়ে বেধেছে সেটার কারণ বের করা দরকার এবং তার ভাই ভাতিজাদের মেরে বারবার রক্তাক্ত করা হয়েছে। এরকম ক্ষোভও প্রকাশ করা হয়েছে।
এই নিয়ে আংগারিয়া ইউনিয়নে এই রমযানেও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
Comments
Post a Comment